0302656005, 01309104931, 01885636363
রাউজান বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি বিজড়িত একটি উপজেলা। রাউজানে জন্ম নিয়ে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়েছেন অনেক মহান ব্যক্তিদের নাম। যাদের মধ্যে রয়েছে মাষ্টারদা সূর্য সেন, এ. কে. এম. ফজলুল কবির চৌধুরী, গবেষক আব্দুল হক প্রমুখ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে এই অঞ্চলের অনেকে অংশগ্রহণ করেছিল। রাউজানে তখন অনেক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল থাকলেও উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল রাউজানবাসী। ভাষা আন্দোলনের ১০ বছর পর স্বপ্ন দেখেছিলেন এ অঞ্চলের খ্যাতিমান প্রতিথযশা ব্যক্তিত্ব তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদের চেয়্যারম্যান এ কে এম ফজলুল কবির চৌধুরী। তিনি সেদিন স্বপ্ন দেখেছিলেন রাউজানবাসীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে একটি কলেজ প্রয়োজন। তাই তিনি রাউজানের অন্যতম প্রতিথযশা দানশীল ব্যক্তি ডাঃ শামসুল হুদা চৌধুরী, এডভোকেট জালাল আহমদ, নূতন চন্দ্র সিংহ, রেবতী রঞ্জন বিশ্বাস, অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ প্রমুখদের সাথে আলাপ আলোচনা করে সর্বসিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে রাউজান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
রাউজানের সূর্য সন্তান মাষ্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে বৃটিশদের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এই অঞ্চলে। এছাড়াও মধ্যযুগের কবি হামিদ আলী, কবি নবীন চন্দ্র সেন, কবি শংকর ভট্ট ও কবি সনানন্দ ভট্ট, শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বি এ বিটি, সাহিত্যিক মাহবুবল আলম, অধ্যাপক আবদুল জলিল, মোঃ মহিউল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সালাম সহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিক, মহান আধ্যাতিœক সাধক, খ্যাতিমান রাজনীতিবিদদের জন্মভূমি ঐতিহ্যবাহী রাউজান। ঐতিহ্যবাহীরাউজান উপজেলার নামেই নামকরণকৃত হয়েছে এই রাউজান কলেজটি।
চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত রাউজান উপজেলাটি সর্বাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যার আয়তন ২৪৬.৫৮ বর্গ কি.মি। কর্ণফুলি এবং হালদা রাউজান উপজেলার পার্শ্বস্থ দুটি বড় নদী। রাউজানের উত্তরে ফটিকছড়ি, দক্ষিণে রাঙ্গুনিয়া ও কর্ণফুলি নদীর পার্শ্বস্থ বোয়ালখালী, পূর্বে রাঙ্গামাটির কাউখালী, পশ্চিমে হাটহাজারী উপজেলা অবস্থিত। রাউজান উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত। সড়কপথে দেশের যেকোন স্থান থেকে চট্টগ্রাম শহরের মুরাদপুর অথবা অক্সিজেন মোড় থেকে বাস যোগে রাউজান কলেজ (মুন্সির ঘাটা) আসা যায়। রাউজান উপজেলা থেকে ১০৭ কি.মি উত্তরে আছে খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ, ৩১ কি.মি দক্ষিণে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ, ১২৬ কি.মি পশ্চিমে সরকারী হাজী এবি কলেজ সন্দীপ এবং ৩৬.৭ কি.মি পূর্বে অবস্থান করছে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ। এছাড়া রাউজান উপজেলার নামে নামকরণকৃত রাউজান কলেজটি চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের পাশে রাউজান উপজেলা সদর থেকে ৭৫০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত।
Today | : | 208 |
---|---|---|
Yesterday | : | 209 |
Last 7 Days | : | 90038 |
Total | : | 381970 |
বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব মাস্টারদা সূযসেন, মধ্যযুগের কবি হামিদ আলী, কবি নবীন চন্দ্র সেন, কবি শংকর ভট্ট ও কবি সদানন্দ ভট্ট, শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বি.এ.বিটি, সাহিত্যিক মাহবুবুল আলম, অধ্যাপক আবদুল জলির, মোঃ মহিউল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সালাম সহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিক, মহান আধ্যাত্মিক সাধক, খ্যাতিমান রাজনীতিবিদের জন্মভূমি ঐতিহ্যবাহী রাউজান। আজ হতে ৫০ বৎসর পূর্বে ১৯৬৩ সালে রাউজানে শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে রাউজান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তৎকালীন পূব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব এ.কে.এম. ফজলুল কবির চৌধুরী।
কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অত্র এলাকার শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, দানশীল ব্যক্তিবগ তাঁকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। আলহাজ্ব ডা. শামসুল হুদা চৌধুরী, এডভোকেট জালাল আহমেদ, খায়েরুজ্জামান চৌধুরী চেয়ারম্যান, নিশি চন্দ্র দাশ, উপেন্দ্র লাল দাশ, বরদা চরণ পালিত, ফজলুল হক চৌধুরী, ইউনুস মিয়া চৌধুরী চেয়ারম্যান, নূতন চন্দ্র সিংহ, ডা. আবদুল সালামসহ যাঁরা প্রতিষ্ঠালগ্নে জমি, অথ, শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের সবাইকে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ও তাঁদের পূণ্য আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আমাদের কলেজের প্রয়াত অধ্যক্ষবৃন্দ- অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদ, অধ্যক্ষ নেপাল চন্দ্র দস্তিদার, অধ্যক্ষ আহমদ হোসেন ও অধ্যাপক-অধ্যাপিকাবৃন্দ, কমচারীবৃন্দ যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং যারা জীবিত আছেন তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীঘায়ু কামনা করছি।
এ কলেজের প্রায় ৩০ জন ছাত্র ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আমাদেরকে লাল-সবুজ পতাকাসহ স্বাধীন ভূ-খন্ড উপহার দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা শহীদ ও প্রয়াত হয়েছেন আমি তাঁদের আত্মার-মাগফেরাত কামনা করছি এবং যাঁরা জাতির গর্বিত সন্তান হিসেবে এখনো জীবিত আছেন তাঁদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
রাউজান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন পূব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব এ.কে.এম. ফজলুল কবির চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান রাউজানের গণ মানুষের নেতা, রাউজান থেকে তিনবার নিবাচিত সংসদ সদস্য জনাব এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী মহোদয় বতমানে এ কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সহযোগিতায় কলেজের সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। যেমন- কলেজের প্রশস্ত গ্যালারীসহ খেলার মাঠ উন্নতকরণ কলেজ মসজিদের দোতলা নির্মাণ, কলেজের ৬ তলাবিশিষ্ট ১টি ও ২ তলা বিশিষ্ট ১টি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ ইত্যাদি। কলেজের শিক্ষার মান ও পূর্বের তুলনায় অনেক উন্নত। কলেজ আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, উন্নত বিজ্ঞান গবেষণাগার ও মূল্যবান বই সমৃদ্ধ গ্রন্থগারসহ বিভিন্ন আধুনিক শিক্ষা উপকরণে সমৃদ্ধ। বতমানে এ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে ১৭৮৫জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। বতমান অথ বছরে কলেজের মাঠের পূরদিকে পুরানো হোস্টেল ভবনের জায়গায় একটি বহুতল ভবন মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী মহোদয়ের প্রচেষ্টায় সরকারী অর্থায়নে নির্মিত হবে। বতমানে এ কলেজের জায়গার পরিমাণ ৪.৫ একর। বতমানে দোতলা বিশিষ্ট তিনটি ভবন রয়েছে যেমন- প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান ভবন।
সেলিম নাওয়াজ চৌধুরী
অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত), রাউজান সরকারি কলেজ।